রাজশাহীর তানোরের সরনজাই ডিগ্রী কলেজে জনবল নিয়োগে অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার নীতিমালা লঙ্ঘন ও গোপণে রাজশাহী শহরের একটি কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্ত্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারী বা লাল ফ্ল্যাগ দেয়া হয়নি। প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগে তৈরীর কথা থাকলেও আগেরদিন তৈরি ও পচ্ছন্দের প্রার্থীদের দেয়া হয় বলেও গুঞ্জন উঠেছে। স্থানীয় অভিভাবক মহলের ভাষ্য, মেধা নয় অর্থের বিনিময়ে জামায়াত-বিএনপি মতাদর্শীদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমপির নাম ভাঙিয়ে প্রার্থীদের কাছে থেকে টাকা আদায় করেন অধ্যক্ষ ইমারত আলী। তারা বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, সরেজমিন তদন্ত করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। নিয়োগ বাণিজ্যের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
এদিকে জনবল নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধের জন্য কলেজের দাতা সদস্য আকতারুজ্জামানের পুত্র গোলাম রাব্বানী বাদি হয়ে রাজশাহী বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। যাহার মামলা নম্বর ৩৪/২০২৩। মামলায় বিবাদী করা হয় কলেজ অধ্যক্ষ ইমারত আলী, সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না ও মহাপরিচালক মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এদিকে মামলার শুনানি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত্য নিযোগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশনা গোপণ করে রাজশাহীতে অবৈধভাবে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর একটি আঞ্চলিক ও একটি জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সৃষ্টপদে পদার্থ, রসায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে একজন করে সহকারী ল্যাব নিয়োগের কথা বলা হয়। কিন্ত্ত অদৃশ্য কারণে পরীক্ষায় হাতেগোনা চেনা মুখের বহিরাগত কয়েকজন আবেদনকারী অংশগ্রহণ করেন। প্রতি পদে একজন ব্যতিত বাঁকিরা ডামি প্রার্থী বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। এতে নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ-অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। আবেদনকারি গোলাম রাব্বানী জানান, আবেদন করার পর জানতে পারলাম আগে থেকেই সব লেনদেন হয়ে গেছে। এমনকি দরদাম করে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। যে বেশি টাকা দিতে রাজি হয়েছে তার চাকরি হবে। তাহলে লোক দেখানো পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লাভ কি। যেখানে মেধার কোন মূল্য নেই, মূল্য আছে টাকার তাহলে পরীক্ষা দিয়ে লাভ কি। অপরজন বলেন, তাকে আবেদন করিয়েছেন অধ্যক্ষ তিনি ডামি প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওই পদে ১৮ লাখ টাকায় অধ্যক্ষের মনোনিত ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নিউমার্কেটে যাদের সঙ্গে অদ্যক্ষ ও সভাপতির আলোচনা হয়েছে। পরের দিন ৯ আগষ্ট শনিবার কাকতালীয়ভাবে তারাই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। স্থানীয়রা সরেজমিন তদন্তপুর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সচেতন মহলের অভিমত এই অবৈধ নিয়োগ স্থগিত করা না হলে এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনে কল গ্রহণ না করায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও কলেজ সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না এবং অধ্যক্ষ ইমারত আলীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।