1. smsitservice007gmail.com : admin :
তানোরে দালালের খপ্পরে পড়ে একটি পরিবার নিঃস্ব  - সতেজ বার্তা ২৪
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন

তানোরে দালালের খপ্পরে পড়ে একটি পরিবার নিঃস্ব 

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩৭ বার পঠিত
Exif_JPEG_420

রাজশাহীর তানোরে এক দালালের খপ্পরে পড়ে একাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।  বিদেশে মোটা অঙ্কের টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজসরল যুবকদের বিদেশ পাঠিয়ে, তাদের পরিবারকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দালাল চক্র।
এঘটনায় প্রতারণার শিকার উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ছাঐড় গ্রামের মৃত ইব্রাহিম আলীর পুত্র এমদাদুল হক বাদি হয়ে একই গ্রামের তোফাত আলীর পুত্র বাবুল হোসেন (৪০) ও বাবুলের পুত্র আপনকে(২৩) বিবাদী করে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। দালালের হাতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা তুলে দিয়ে তারা এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মোহাম্মদ আলীপুর গ্রামের তোফাত আলর পুত্র বাবুল হোসেন ও বাবুলের পুত্র আপন তারা একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা গ্রামের সহজসরল যুবকদের মোটা অঙ্কের টাকা বেতনের লোভ দেখিয়ে বিদেশ পাঠায়। এর পর বিদেশের মাটিতে তাদের জিম্মি করে দেশে পরিবারের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হয়। স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে তারা এলাকার প্রায় কুড়ি জনকে বিদেশ পাঠিয়েছে। যারা কোনো কাজ না পেয়ে বিদেশের মাটিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এদেরই একজন ছাঐড় গ্রামের এমদাদুল হকের পুত্র সবুজ আলী। আদম ব্যাপারী সিন্ডিকেট চক্রের দালাল মোহাম্মদআলীপুর গ্রামের তোফাত, বাবুল ও আপন ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে
সবুজকে প্রায় তিন মাস আগে মালেশিয়া পাঠায়। এর পর সবুজকে সেখানে জিম্মি করে পরিবারের কাছে থেকে টাকা দাবি করেন। এদিকে তাদের জিম্মি দশায় ঠিকমতো খাবার না পেয়ে সবুজ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। এখবর জানতে পেরে সবুজের পরিবার আবারো দালাল চক্রকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে তাকে দেশে ফেরত নিয়ে এসেছে। গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সবুজ বাংলাদেশে ফেরত আসেন।
এদিকে সবুজকে বিদেশ পাঠানোর  জন্য তার পরিবার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা ধারদেনা, ফসলী জমি  ও গরু বিক্রি করে দালাল তোফাত, বাবুল ও আপনের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর তাদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে প্রতারণার শিকার সবুজের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে এমদাদুল হকের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ১ নম্বর বিবাদী একজন দালাল, সে বিভিন্ন লোকজনদের বিদেশে পাঠানাের কাজ করে। গত
১১/০৭/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে তার বড় ছেলে মোঃ সবুজকে (২২) মালয়েশিয়া পাঠানাের জন্য উপরোক্ত বিবাদীদ্বয়কে ৫,২৫,০০০/- (পাঁচ লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা প্রদান করিলে ১ নম্বর বিবাদী তার ছেলেকে মালয়েশিয়াতে প্রেরন করে। পরবর্তীতে তার ছেলে মোঃ সবুজ মালয়েশিয়াতে গিয়ে কোন কাজ পায় নাই।
তার ছেলে মালয়েশিয়াতে গেলে ১ মাস তার সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারি নাই। ০১ মাস পরে তার ছেলে হঠাৎ মালয়েশিয়া থেকে মোবাইল করে জানায় যে, তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে, মুক্তিপন হিসেবে বাংলাদেশী টাকায় ৩,০০ ,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা তাদের দিতে হবে। তিনি তার ছেলেকে মুক্ত করার জন্য ১ নম্বর বিবাদীর সাথে দেখা করার জন্য গেলে বিবাদীকে খুজে পাই নাই। পরবর্তীতে তিনি তার ছেলের মুক্তির জন্য মুক্তিপন হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, তানোর শাখার মাধ্যেমে গত ১০/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ৩,৬০,০০০/- (তিন লক্ষ ষাট হাজার) টাকা পাঠালে মালয়েশিয়া হতে তার
ছেলেকে ছেড়ে দেয়। তার ছেলে মালয়েশিয়াতে থাকা তার পরিচিত মোঃ কোরবান আলী (৩৫) এর
মাধ্যেমে ১,২৬,০০০/- (এক লক্ষ ছাব্বিশ হাজার) টাকার বিমান টিকিট কেটে মোঃ কোরবান আলী আমার
ছেলেকে বিমানযোেগে বাংলাদেশে গত ১৭/১০/২০২৩ খ্রিঃ আসিলে মাইক্রোবাসযোাগে ২৬,০০০/- (ছাব্বিশ
হাজার) টাকা খরচে তার বাড়ীতে নিয়ে আসেন। মালয়শিয়াতে বন্দী থাকা অবস্থায় তার ছেলেকে নির্যাতন
করায় বর্তমানে তার ছেলে মোঃ সবুজ মানসিকভাবে অসুন্থ হয় পড়েছে। তার ছেলেকে বিদেশে ১০,৩৭,০০০/- (দশ লক্ষ সাইত্রিশ হাজার) টাকা খরচ হয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি গত ১৮/১০/২০২৩ খ্রিঃ
সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকায় ১নম্বর বিবাদীর নিকট তার ছেলের বিদেশ পাঠানোর সকল খরচ আদায়ের
জন্য গেলে বিবাদীকে পাওয়া যায় নাই। বর্তমানে ১ নম্বর বিবাদী পলাতক অবস্থায় আছে। ২ নম্বর বিবাদীকে টাকার কথা বলিলে বিবাদী ১ নম্বর বিবাদীর নিকট হতে টাকা নিতে বলে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তোফাত আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার পুত্র বাবুল হোসেনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নাই। বাবুল কিভাবে লোকজন বিদেশ পাঠায় সেটা তার জানা নাই। তবে বাবুল হোসেন বিদেশ থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে সবুজ আলীর পিতা এমদাদুল হক বলেন, দালাল তোফাত, বাবুল ও আপন তারা এক সঙ্গে তার কাছে থেকে কয়েক দফায় প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে তার পুত্র সবুজ এখন মানুষিক ভারসাম্য হারিয়েছে। তিনি টাকা ফেরতসহ তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে
এ জাতীয় আরও খবর
Translate »