1. smsitservice007gmail.com : admin :
তানোরে একশ' বিঘা ফসলী জমি ধ্বংস করে পুকুর খনন - সতেজ বার্তা ২৪
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

তানোরে একশ’ বিঘা ফসলী জমি ধ্বংস করে পুকুর খনন

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ৮৮ বার পঠিত

রাজশাহীর তানোরে উপজেলা প্রশাসনের কতিপয কর্মকর্তার নেপথ্যে মদদে গভীর নলকুপের স্কীমভুক্ত প্রায় একশ’ বিঘা (তিন ফসলী) কৃষি জমিতে শুরু করেছে অবৈধ পুকুর খনন।স্থানীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমির ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে।
অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা স্থানীয় প্রশাসন ও একশ্রেণীর গণমাধ্যম কর্মীদের  ‘ম্যানেজ’ করে রাতের আঁধারে পুকুর খননের কাজ শুরু করছে। আর এদের সহযোগিতা করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের কতিপয় কর্মচারী।
স্থানীয় কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এর ফলে ওই এলাকার অন্তত চার গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি পুকুরসংলগ্ন প্রায় হাজার বিঘা জমিও বছরের অর্ধেক সময় পানির নিচে থাকবে। ফলে ধান চাষ বন্ধ হয়ে যাবে। ওই পরিমাণ জমি থেকে প্রায় এক হাজার একশ’ টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হবেন কৃষক। এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবার জীবন-জীবিকা নিয়ে সংকটে পড়বেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০ জানুয়ারি তানোরের চাঁন্দুড়িয়া  ইউনিয়নের (ইউপি) রাতৈল মাঠে প্রায় একশ’ বিঘা জমিতে পুকুর খনন শুরু করে দালাল চক্র। কুষ্টিয়া জেলার এক মাছ ব্যবসায়ী তাদের দিয়ে পুকুর খনন করাচ্ছে।কিন্তু  বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর নজরে আসলে তিনি অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন। এতে প্রশাসনের টনক নড়ে তারা আপাততো পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দেন।
স্থানীয়রা বলছেন, মোহনপুর উপজেলার ধুরইল এলাকার চিহ্নিত দালাল জনৈক আনোয়ার হোসেন স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেছেন। তিনি সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ। এ কারণে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি ফের পুকুর খননের কাজ শুরুর পাঁয়তারা করছে।
এদিকে ২৯ জানুয়ারী সোমবার
সরেজমিন দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠের মাঝে প্রায় একশ’ বিঘা ফসলী জমি ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে। কিন্তু কিছুটা খননের পর গ্রামবাসির বাধায় পুকুর খননের কাজ বন্ধ রয়েছে, তবে পাশেই তিনটি সেভেন এক্সকেভটর (ভেঁকু) মেশিন রাখা আছে। এ সময় একজন এক্সকেভেটর চালক পরিচয় দিয়ে বলেন, মালিকের বাড়ি কুষ্টিয়া। তবে দেখভাল বা সহায়তা করছেন আনোয়ার হোসেন, রাকিব হোসেন ও দারেস আলী। তিনি বলেন, প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিক ম্যানেজ করতে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এসব কৃষিজমিতে পুকুর খননের ফলে ওই মাঠের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়াও রাতৈল-বাকসপুর, একতারপুর, জুড়ানপুর গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। পুকুর সংলগ্ন জমির মালিক রমজান আলী বলেন, মাঠে তার জমি রয়েছে। বোরো এবং রোপা ধান চাষ করা হয়। পুকুর খননের ফলে বর্ষা মৌসুমে এ মাঠের পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হবে। জলাবদ্ধতার কারণে জমি বছরের অর্ধেক সময় পানির নিচে থাকবে। ফসল ফলবে না। এ কারণে কয়েকটি গ্রামের  প্রায় কয়েকশ’ কৃষক সমস্যার মধ্যে পড়বেন। কৃষকেরা বলেন, এ মাঠের জমি ধানচাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। বছরে দুবার ধান চাষ হয়। প্রতিবিঘা জমিতে কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ মণ করে ধান উৎপাদন হয়। মাঠে জমি রয়েছে প্রায় দেড় হাজার বিঘা। বছরে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মণ ধান উৎপাদিত হয়। ফলে এ পরিমাণ ধান থেকে তারা বঞ্চিত
হবেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য সামমোহাম্মদ বলেন, এখানে পুকুর খনন করা হলে কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে এবং অসংখ্য কৃষক পথে বসবে, ঘরে দেখা দিবে খাবার সঙ্কট।
অভিযোগ উঠেছে, তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের কতিপয় কর্মকর্তার নেপথ্যে মদদে কতিপয় কর্মচারি তানোর এলাকায় মালিকদের কাছ থেকে টাকা তোলার দায়িত্ব পালন ও পুকুর খননের কাজে সহযোগিতা করছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, যারা কৃষি জমি ধ্বংস অবৈধ পুকুর খনন করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এদের বিষয়ে কোনো ছাড় নাই। তিনি বলেন, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ব্যাপারে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, পুকুর খননের বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন ছুটিতে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ জাতীয় আরও খবর
Translate »